ঢাকায় রোজাদার ব্যাক্তিদের দুর্দশা নিয়ে কিছু কথা বলার ছিল


রমাজান এলে আমাদের দেশে স্কুল, কলেজ বন্ধ হয়ে যায় কারনটা হলো ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়েদেরকে রোজা রাখার পাশাপাশি যেন স্কুল কলেজের বাড়তি পেইন সহ্য করতে না হয়।
অফিস, আদালত সহ ব্যাংকও অনেক আগে ছুটি হয়ে যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, আমাদের ব্যাস্ত নগরীতে আগে ছুটি হলেও তাদের মধ্যে অনেকেই কর্মস্থল থেকে সঠিক সময় বাসায় পৌছতে পারে না, হয়তো অনেকে দিন শেষে তার প্রিয় মানুষদের সাথে ইফতার করতে পারে না। এর মধ্যকার কিছু ছবি আজ বাসায় আশার সময় তুলেছিলাম রাস্তা থেকে।
কয়েকটি সমস্যার কারন নিচে তুলে ধরলাম।
প্রথমে আসি সিটিং সার্ভিসের কথা নিয়ে। যে শহরে শত শত মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে ঠিক সময়ে তার গন্তব্যে পৌছবে বলে, সারাদিন শেষে একটু তাড়াতাড়ি তার প্রিয় মানুষের কাছে পৌছব বলে, যারা বাসের পিছনে ঝুলে হলেও বাসায় যেতে রাজি, সেইসব মানুষেরা যেন বাসে উঠতেই না পারে, তাই কথিত সিটিং সার্ভিস বাসগুলো তাদের বাসের গেট বন্ধ করে রাখে কি করে?
আজ আমিসহ অনেকেই শাহবাগে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাত একটা সিটিং বাসে কিছু মানুষ উঠছিল, কিন্তু যাত্রিরা তাদের উঠতে দিল না। এবং বলছিল যে তারা সিটিং ভাড়া দিয়েছে, তাই দাঁড়ানো কোন যাত্রী নিতে পারবে না।
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এই মানুষগুলোই হয়তো অনেক সময় সিটিং বাসে দাঁড়িয়ে তাদের কর্মস্থলে গিয়েছে। অনেক সময় জোড় করেই কোন না কোন বাসে উঠেছে। আমাদের ঢাকার বেশিরভাগ সিটিং সার্ভিসগলো লোকাল সার্ভিসে চলে, কিন্তু ভাড়া নেয় সিটিং। তার থেকে অন্ততপক্ষে রমজান মাসে ঢাকায় সিটিং সার্ভিস নামক কোন বাস না থাকলেই অন্তত পক্ষে দিন শেষে আরো কিছু বেশি মানুষ তাদের প্রিয়জনের সাথে ইফতার করতে পারতেন।
এবার আসি দ্বিতিয় সমস্যায়, আমরা এমন এক দেশে বাশ করি, যেখানে কিছু নীতিনির্ধারকদের বুদ্ধি নিয়ে আমি সন্দিহান। ২০০৮ সালের পরে বেশ কয়েকবছর নতুন করে বাসায় রান্না করার জন্য গ্যাস সরবারহ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু বাস, প্রাইভেট কার তেল থেকে গ্যাসে কনভার্ট করা নিষিদ্ধ ছিল না। তার মানে এটা দাড়ালো যে বাসায় রান্না করার জন্য গ্যাস সরবারহ বন্ধ রেখে আমাদের দেশে গাড়ি আর বাসে গ্যাস সরবারহের সুযোগ দেওয়া হয়। প্রাইভেট কারতো বাড়বেই। যেখানে সরাকার তেলের খরচ ৭০% কমিয়ে দিয়েছেন।
আরেক মহল আছেন, যারা গত ৪.৫ বছর আগেই ঢাকায় নতুন সি,এন,জির অনুমোদন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছন, কিন্ত প্রাইভেট কার কিনতে কোন বাধা নেই। কিন্তু ১ টা প্রাইভেট কারে সারা মাসে মাত্র একটা পরিবারই চলতে পারে, কিন্তু একটা সি,এন,জি থেকে কিন্তু সারা মাসে কম করে হলে ১০০ পরিবার সেবা পেত। ২ টা প্রাইভেট কারে সর্বোচ্চ ৭-৮ জন মানুষ থাকে। কিন্তু একটা বাসে গড়ে ৪০-৫০ জন মানুষ চলাচল করতে পারে। তাই সিএনজি, লোকাল বাসের ব্যবহার না কমিয়ে, প্রাইভেট কার ব্যবহার কিছুটা কমানো যেতে পারে, আর সিটিং সার্ভিস পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা দরকার।
আর তৃতীয়ত ট্রাফিক জ্যাম। এটা নিয়ে কিছুই বলার নাই। কারন এটার কোন সমাধান আদৌ পাওয়া যাবে কিনা, তা আমার জানা নেই।
আমার কাছে যা মনে হয়েছে, তাই লিখেছি, জানি এই লেখার উপকারিতা খুব একটা নেই, তাও লিখলাম।
অনেকে বলতে পারেন আমি কেন এত কথা বলছি, এর পিছনে কারনটা হলো, আমার মা-ভাই সহ কিছু আত্মীয় স্বজন ছাড়া বাকি সব আপন এবং প্রিয় মানুষগুলোই মুসলিম ধর্মাবলম্বি।


লেখক :Anupom kumar
Share on Google Plus

About Anonymous

0 comments:

Post a Comment