জয় হোক মানবতার

মানব জীবনের বিবর্তন , উন্নয়ন ,অভীষ্ট লক্ষ্য ও মানবতার জন্য কোনো আন্দোলন সূচনা করতে সারা জীবনের সাধনা ও উপলব্ধি মনীষীদের নানা মহৎ বাণী অস্ত্রের চেয়েও শক্তিশালী। এ প্রসঙ্গে কবি নজরুল ইসলাম ও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার উদ্ধৃতি দিয়েই আমার লেখা প্রসঙ্গে আসতে চাই......
 




জাতীয় কবি নজরুল বলেছেন,

"ঈমান ঈমান বল রাত-দিন ঈমান কি এত সোজা?
ঈমানের কথা বলে কি কেহ বহে শয়তানি বোঝা?
শোন্ মিথ্যুক এই দুনিয়ায় পূর্ণ যার ঈমান,
শক্তিধর সে টলাইতে পারে ইঙ্গিতে আসমান"। 

সুকান্ত বলেছেন, 

"শোনরে মালিক শোনরে মজুতদার,
তোদের প্রাসাদে জমা হল কত মৃত মানুষের হাড়,
হিসাব দিবি কি তার"?
"এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার"।
কোলরিজ নামে এক মনীষী বলেছেন, "আমাকে মনে রাখতে হবে আমার জন্মটা যেন মৃত্যুর মধ্যেই শেষ হয়ে না যায়"।
সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ বর্তমান সময়ে সমাজের এক সামাজিক ব্যাধি। দিনের পর দিন মুষ্টিমেয় কিছু স্বার্থনেষী মানুষ ধর্মের অপব্যবহারের মাধ্যমে স্বীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য নিরীহ কিছু মানুষকে হত্যা করছে। দেশের শান্তিপ্রিয় নিরীস্ত্র মানুষের উপর ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে যেভাবে পাকিস্তানী ঘাতকরা ঝাপিয়ে পড়েছিল ঠিক একই কায়দায় তাদের দোসরা প্রশিক্ষন নিয়ে হত্যা করছে দেশের বুদ্ধিজীবি, শিক্ষক,মুক্তমনা লেখক,ব্লগার,পুলিশ,সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরীহ পুরোহিত,আশ্রমের সেবক,ব্যবসায়ী ও বিদেশী নাগরিক। ৭১ এর ঠিক এমনটাই ঘটেছিল। পার্থক্যটা হল কৌশলগত। পাকিস্তানী ঘাতকরা তাদের সমস্ত শক্তি নিয়ে বীরদরপে কাপুরোষচিতভাবে হামলা চালিয়েছিল আর তাদের দোসরা কাপুরোষচিত ভাবে নীরব ঘাতকের মত নির্দিষ্ট কাউকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করছে। তাদের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যে কোন পার্থক্য নেই। কিন্তু তাদের এই ঘৃণ্য ঊদ্দেশ্য কখনো সফল হবে না এই বাংলার মাটিতে যেমনটা সফল হয়নি তাদের পূর্ব পুরুষদের।
আমরা বাঙ্গালী,আমরা বীরের জাতি। হারতে শিখিনি,বিজয়ের মধ্যদিয়ে আমরা জন্মেছি। ৭১ এ পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলে যেমনভাবে আমরা পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলাম। পাকিস্তানী বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে এ দেশের মাটি থেকে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিলাম। ঠিক একইভাবে বঙ্গবন্ধু তনয়া দেশরত্ন শেখ হাসিনার দৃঢ় বলিষ্ট নেতৃত্বে ঐসকল ধর্ম ব্যবসায়ী,সাম্প্রদায়িক,মৌলবাদী গোষ্ঠির সন্ত্রাসবাদ,গুপ্তহত্যা,উগ্রতা ও অপপ্রচার এই দেশ থেকে সমূলে নির্মূল হবে বলে বিশ্বাস করি। তাই সময় এখন সচেতনতা বৃদ্ধি করা, সাম্প্রদায়িকতার এই বিষবাষ্প যারা ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা । তা না হলে আপনি কিংবা আমি কেউ এই বিষক্ততা থেকে রক্ষা পাবো না। মনে রাখতে হবে সাম্প্রদায়িক মানষিকতা সম্পূর্ণ ব্যক্তির কোন ধর্ম নেই,জাত নেই। আছে সুধুমাত্র ধর্মের অপব্যবহারে মাধ্যমে স্বীয় স্বার্থ হাসিলের পায়তারা।
জয় হোক মানবতার।।

লেখক: রাজন মোহন্ত,সাংগঠনিক সম্পাদক,
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ,জগ্ননাথ হল,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment