সময় বেলা তিনটা। আমরা ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের ক'জন সিনিয়র ভাই ও জুনিয়র মিলে ক্যান্টিনের বারান্দায় আড্ডা দিচ্ছিললাম।হঠাৎ একজন মেয়ে গুটি গুটি পায়ে ওখানে উপস্থিত,বয়স ১৮ হবে হয়তোবা।শীর্নকায়
স্বাস্থ্য ও ছিপছিপে গড়ন,একদম অসুন্দরী না।কি যেন বলতে চায় সবাইকে।কিছুটা
সপ্রতিভ হয়ে আমরা জানতে চাইলাম "কি ব্যাপার?" কিছুটা কাচুমাচু ও জড়তা নিয়ে স্বলজ্জ ভঙ্গিতে বললো " এইডা ঢাকা কলেজ না? আপনারাতো ছাত্র ভাই! কয়েক মাস যাবৎ আমার স্বামী
আমারে ভরনপোষন দেয়না,আপনারা একটা বিচার করে দেন।আপনার পারবেন আমি জানি"। ওর স্বামী আমাদের কলেজ সংলগ্ন এবিসি গার্মেন্টসে চাকুরী করে,মেয়েটাকে রাতে দরজা আটকে প্রচন্ড মারধর করে,যার নেপথ্যে ওর সহকর্মী এক মেয়ের প্রতি আসক্তির অভিযোগও শোনা গেলো বেশ জোরেসোরে! ওদের দুজনের বাড়ীই ঠাকুরগাও জেলা সদরে।একটা শিশু হয়ে মারাও গিয়েছে! মেয়েটার অসহায় আর্ত চাহনি ও বিচারের আকুতি,ডাকা হলো ওর স্বামী মামুন কে। ২০মিনিট এর ভেতর মামুন আসলো।অভিযোগের সত্যতা যাচাই হলো দীর্ঘ সময় দুপক্ষের কথা শোনার পর। আমরা শুনলাম মন দিয়ে।মনে হলো ছোট বোনের মত।আমরা আন্তরিক হয়ে গেলাম বিষয়টাতে।মেয়ের দাবী স্বামী যেখানেই থাকবে যে অবস্তায় থাকবে মেয়েটা তার সাথে থাকতে রাজী! ছেলে গড়িমসি করছে,মেয়েকে দেশে পাঠিয়ে দিয়ে ও এড়িয়ে যেতে চাচ্ছে নানা অজুহাতে। আমরা এবার শক্ত পদক্ষেপ নিলাম।ছেলে আর্থিক অপারগতার কথা বলছে।আমরা ঐ গার্মেন্টসই মেয়েটার একটা চাকুরীর ব্যবস্থ্যা করলাম ফ্লোর ইনচার্জ কাশেম মিয়ার সাথে কথা বলে।
এবার অন্য সকল বিষয়গুলোতে যৌক্তিক ও কড়া ভাষায় ব্রিফ দিলাম।এখন ওরা দুজনই একসাথে থাকবে।আমরা দায়িত্ব নিয়ে হাতে হাত মিলিয়ে দিলাম।যোগাযোগ রাখতে বললাম।আশা করি ওদের দাম্পত্য জীবন সুখের হবে। মেয়েটার চোখে মুখে এক অসীম কৃতজ্ঞতার ছাপ ঢাকা কলেজের 'ভাইদের' প্রতি!
লেখক:এম এইচ অলড্রিন
0 comments:
Post a Comment